Thursday, February 4, 2016

পড়ালেখায় ভালো করার মন্ত্র!


এই আপনিই কোচিং সেন্টারে, স্যারের বাসাতে, স্কুলের পরীক্ষাতে, এমনকি প্রাইভেট টিউটরের সামনে দাপিয়ে বেড়াতেন। সেই আপনিই এখন ক্লাসের লাস্ট বেঞ্চে বসে মাথা লুকিয়ে রাখেন, টিচারদের দৃষ্টি এড়াতে। যেই আপনি চেয়ার-টেবিলে বসলেই, কোচিংয়ে ভাইয়ার লেকচার শুনলেই, পড়ালেখা হয়ে যেতো। সেই আপনিই নিয়মিত ক্লাসে গিয়ে, এসাইনমেন্ট-ল্যাবের রিপোর্ট ঠিক সময়ে জমা দিয়েও, এক লাইনও মাথায় ঢুকাতে পারেন না। কেনো পারেন না? কারণ আপনি ভার্সিটিতে যান, শিখার চেষ্টা করেন না। বাসায় এসে পড়েন, স্টাডি করেন না। এসাইনমেন্ট জমা দাও, নাম্বার পাওয়ার কম্পিটিশন করেন না। ক্লাসে যান, পড়া বুঝে নেওয়ার আগ্রহ দেখান না। আড্ডা মারো, ট্যুর দাও, ক্লাস লেকচার নিয়ে আলোচনা করেন না। দুই নাম্বার কম পাইলে, হু কেয়ারস, নাম্বার ডাজেন্ট মেটার বলে বেনসন ধরান, টপকে যাওয়ার চ্যালেঞ্জ নেন না। তাই “পরীক্ষার আগের দিন রাতে, বুঝে না বুঝে আপলোড করেন মাথায়, ডাউন-লোড করেন পরীক্ষার খাতায়”।

আপনাকে স্টাডি করতে হবে- মুভি দেখা, খেলা দেখার স্টাইলে। মুভি দেখার মতো, চোখ থাকবে বইয়ের পাতার দিকে, মাথার চিন্তা থাকবে- পড়া লজিক্যালি কোন জায়গা থেকে কোন জায়গায় যাচ্ছে সেটা চিন্তা করতে। ইমোশন এবং ফিলিংস থাকবে, পড়া অগ্রসর হওয়া, বুঝতে পারা, শেষ হওয়ার দিকে। পড়ালেখার জন্য ইমোশন, আবেগ, ক্রেজ না থাকলে- দুই মিনিট পরেই ভাল্লাগেনা ভাবতে, মোবাইল ধরতে, ফেইসবুক খুলতে মন আকুপাকু করবে। আর পড়া মনে রাখতে হবে প্রিয় গানের লিরিক্স মনে রাখার স্টাইলে। দুই-একবার শুনলে দুনিয়ার কারোরই গানের লিরিক্স মনে থাকবে না। তাই বারবার শুনতে হয়। একইভাবে একবার পড়লে পড়া কারোরই মনে থাকবে না। বারবার পড়ে, স্টাডি করতে হয়। প্রথমবার পড়ে চ্যাপ্টারে সম্পর্কে আইডিয়া নিবা। পরেরবার আরেকটু বুঝার চেষ্টা করবা, ড্রয়িং থাকলে আঁকবা, পরীক্ষার খাতায় লিখার মতো করে লিখবা, রাতে বিছানায় শুয়ে চোখ বন্ধ করে রিভাইজ দিবা।

ক্ষুধা লাগার পরে, খেতে না পারলে যেমন চটপট করতে থাকেন। দিনের পড়া দিনে শেষ করতে না পারলে সেই লেভেলের চটপট করতে হবে। পড়ালেখাকে জীবনের অপরিহার্য অংশ বানাতে হবে। তখন পড়ালেখার ভালো পরিবেশ থাকুক বা না থাকুক, সাবজেক্ট কঠিন হোক বা বায়বীয় হোক, আপনি ঠিকই হায়েস্ট নাম্বার পাবে। গার্লফ্রেন্ড অন্য ছেলের প্রোফাইল পিকচারে লাইক দিলেও আপনি ভরের নিত্যতার সূত্র ছন্দ করে পড়তে থাকবেন। নিজেই নিজেকে ডেডলাইন দিয়ে পড়া শেষ করবে। নিজে নিজেই মডেল টেস্ট, মক টেস্ট দিবে। কিছুক্ষণ বসে বসে পড়তে ভালো না লাগলে, হেটে হেটে পড়বেন, জায়গা চেইঞ্জ করে পড়বেন। বাসে, বাথরুমে, দুই ক্লাসের গ্যাপে, এমনকি বই না থাকলে মনে মনে রিভাইজ দিবেন। এইটাকে বলে স্টাডি। এইটাকে বলে ক্রেজি। এইটাকে বলে আতলামি। এই আতলামি একটা সিরিয়াস নেশা। এই নেশার জগতে ঢুকতে পারলে- ডিপার্টমেন্টের টিচার হওয়া, প্রেসিডেন্ট থেকে গোল্ড মেডেল নেওয়া, ফুল-ব্রাইট স্কলারশিপ পাওয়া, এমনকি জুনিয়র ব্যাচের সুন্দরীর ভালবাসা, কোনটাই কোন ব্যাপার না।
Previous Post
Next Post
Related Posts

0 comments: